শাহবাগীদেরও বিচার চায় জনগণ : জামায়াত আমির
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
১৬-১২-২০২৪ ০৩:৪৫:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৬-১২-২০২৪ ০৮:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘শাহবাগীদের’ দাবিতে যাদের হত্যা করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে— তাদেরও আবার বিচারে ফিরিয়ে আনা হবে, ইনশাআল্লাহ। আর যেসব ‘শাহবাগী’ সেদিন বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা সরকার গঠন করেছিল, জনগণ তাদেরও বিচার চায়।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত সমাবেশ ও বিজয় র্যা লি অনুষ্ঠিত হয়। র্যা লি-পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আজ থেকে কয়েক বছর আগে আল্লাহর কিছু বান্দাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়েছিল। এই বাংলাদেশের পথ খুঁজে পেতে অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। আমাদের বন্ধুদের কী অপরাধ ছিল? তাদের কোনও অপরাধের কথা আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারলো না। যারা মেরেছে, এরা মানুষ নয়, এরা পশু। আল্লাহ-তায়ালার ভাষায়, এরা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট। এই মজদুর পরিবারগুলো সেদিন আদালতে গিয়ে বিচার চেয়েছিল, মামলাও দায়ের হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতার গরমে সে মামলা খেয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা কথা দিচ্ছি, এই বিচার আবার ফিরিয়ে আনা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাক্ষী, এই বিশ্ব সাক্ষী— আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি, করবোও না। আমরা প্রিয় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব কোনও আগ্রাসীদের কাছে কোনও হেজিমোনিস্টদের কাছে বিক্রি করবো না, করতেও দেবো না। যারা বিক্রি করেছিল আজকে তারা পালিয়ে গিয়ে ওখানেই আশ্রয় নিয়েছে। তারা এই দেশকে নিজের দেশ মনে করতো না। কারণ এই দেশে তাদের বাচ্চা-কাচ্চা বসবাস করতো না। তাদের বাচ্চাদেরকে নিরবে অন্য দেশে পাঠিয়ে দিয়ে— তারা এই দেশে সন্ত্রাস করে ত্রাসের মাধ্যমে এই দেশকে শোষণ করেছিল।
জামায়াতের আমির বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) মূলত প্রতিশোধ নিতে এসেছিল, আপনারা জানেন কীসের প্রতিশোধ। আমি জিজ্ঞেস করি— সেদিন আপনার পিতাকে কারা হত্যা করেছিল? যারা একাত্তরের রণাঙ্গনে বুক চিতিয়ে যুদ্ধ করেছিল, তাদের হাতে আপনার পিতাকে নিহত হতে হবে কেন? আপনারাই জবাব খুঁজেন। এরজন্য দায়ী কারা? কারা সেদিন ব্যাকফুটে ছিল? কারা সেদিন নব্য সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছিল। কাদের নেতা বলেছিল— ডানে যেদিকে তাকাই তারা চোর, বামে যেদিক তাকাই তারাও চোর। সামনে যেদিকে তাকাই ওরাও চোর, পেছনে যেদিকে তাকাই ওরাও চোর। কাদেরকে বলেছিলেন উদ্দেশ্য করে? সেই জবাব আজকে তাদেরকে খুঁজতে হবে। কাজেই প্রতিশোধ জনগণের ওপর নয়, প্রতিশোধ নেন আপনাদের অপকর্মকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর।
তিনি বলেন, আশ্চর্য লাগে তারা (আওয়ামী লীগ) বাংলাদেশটাকে টুকরা টুকরা করে বিভক্ত করে হিংসার রাজত্ব কায়েম করে পালিয়ে গিয়ে এখনও বাংলাদেশকে তারা স্থির থাকতে দেন না। তারা মাঝেমধ্যেই ফণা তুলে ফুসফাস করবার চেষ্টা করে। যেই জাতি আপনাদের উচিত শিক্ষা দিয়ে তাড়াতে পেরেছে, সেই জাতি আপনাদের ফণাও একদম গুঁড়া করে দিতে পারে। এটা মনে রাখবেন, এই দেশে যোদ্ধা দুই লাখ চার লাখ নয়। এই দেশে যোদ্ধা মিনিমাম ১০ কোটি। এই ১০ কোটি যোদ্ধার ২০ কোটি হাত সদা প্রস্তুত যেকোনও ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্যে। আমরা আল্লাহ তায়ালার সাহায্য চাই— আমরা যেনো অন্যায় এবং অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই করতে পারি। প্রিয় দেশবাসী আসুন, আজকে আমরা আরেকবার অঙ্গীকার করি— এই বিজয় দিবসে আমরা অবশ্যই দেশকে ভালোবাসবো, আমরা এই দেশকে কারও তাবেদার বানাতে দেবোনা এবং কেউ তাবেদারি করতে আসলে তাকেও আমরা ছাড় দেবো না।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুর সবুর ফকির, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এইচ এম আব্দুল হালিম প্রমুখ। এসময় জামায়াতে ইসলামীর থিম গান পরিবেশন করেন দলের কর্মীরা। সমাবেশ শেষে তারা জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে পুরানা পল্টন মোড় থেকে বিজয় র্যা লি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হয়।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিবেদক/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স